যখন লিখছি তখন চোঁখের চার কোনে জলে টগবগ। সৃস্থির আয়না তাড়াঁচ্ছে বার বার। বাবার গল্প শুরু হয় ছেলের জন্মের আগ মুহূর্ত থেকেই। জন্মের পর ছেলেকে নিয়ে খেলা তাকে নিয়ে বাজারে যাওয়া আর প্রথম স্কুল ছুটির সময় গেটে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করা কখন তার আদরের ছেলে ছুটে আসবে। স্কুলে যাওয়ার সময় সকালে ১০ টাকার নোট হাঁতে দেয়াটা সাধারণত মায়েরা করেন। কিন্তু কিছুক্ষেত্রে তার উল্টোও হয়। বাবা তাঁর আদরের ছেলের হাঁতে ১০ টাকা নোটের টাকা তুলে দেন। আর রমজান মাসে রাতে তুলে ভাত খাইয়ে দিতেন। পরেরদিন সকালে কিংবা দুপুর বেলা ১ টা রোজা হয়ে যেত গল্প গুলো এমনই সাধারণ।
আমার আর আব্বুর গল্পগুলোও ঠিক এমন। আমি স্বভাবতই খুব আবেগী আর রাগী। আর আব্বুর কথা মনে পরলে এখন আরও বেশি আবেগী। যার প্রতি ভালোবাসা বেশি থাকে তার কাছে এক্সপেকটেশন টাও উচ্চ থাকে। বাবা কখনও আমাকে কোন কিছুর জন্য না করেননি। এই রাজনীতির যে হাঁতেকরি তাও মরহুম বাবার হাঁত ধরেই। যদিও মানা করেছেন আমার মা তথাপি বাবা শিক্ষা দিয়েছেন কিভাবে সচ্চ রাজনীতি, সমাজনীতি ব্যাক্তি জীবনে সৎ থাকতে হয়। কখনও বাবা যদি কোনকিছু মানা করতেন তখন আমি তার মাথায় হাত বুলিয়ে তা আদায় করে নিয়েছি। প্রতিদিন পড়ার টেবিলে যাওয়ার সময়, স্কুলে যাবার সময়,আর রাঁতে অংকের হিসাব নেওয়া বাবার ছিল নিত্যদিনের রুটিন। স্কুলে ঘটা সব কথা শেয়ার করতাম মরহুম মায়ের পাশাপাশি বাবাকেও।
কলেজে জীবনেও তাই। সব গল্প, পরীক্ষার হলের সব গল্প শুনতো আব্বু। খুব আগ্রহ নিয়ে শুনতেন। প্রতিদিন যখন বাহিরে থাকতাম আব্বু বলতেন বাবা ক্লাস হচ্ছেতো ঠিক মত, কেউ কিছু বলছে, এক্সাম ভালো হইছে। নাও এখন খেয়ে ঘুমাও রাতে গল্প হবে। অদ্ভুত ভালোবাসা।
তবে হ্যা মধুর সম্পর্ক টানাপোড়ন ও আসে। মাঝে মাঝে আমার ও হয়েছে এক সময় বাবা অভিমান করে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। এখন কষ্ট হয় খুব, একবার রোজার মাসে মরহুম আব্বুর সাথে আমার অসাধারন কিছু মুহুর্ত আছে যা আমাকে তাড়া দিয়ে বেড়ায় সারাক্ষন।
বাবা দিবসে সবার কাছে আমার মরহুম বাবা মায়ের উভয়ের জন্য দোয়ার আবেদন রইল।
লেখকঃ
মোঃ শেখরুল ইসলাম
সাবেক সভাপতি
জুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগ
অগ্রদৃষ্টি.কম // এমএসআই